কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধনঃ
সোনাদা, মানে সুবর্ণ সেন – ইতিহাসের অধ্যাপক, কিন্তু সে শুধু বইয়ের পাতা ঘেঁটে থাকেনা। ধাঁধা, গুপ্তধন আর পুরোনো ইতিহাসের রহস্য তাকে খুব টানে। তার সঙ্গে আছে দুই প্রিয় সঙ্গী – আবির আর ঝিনুক। হঠাৎ একদিন সোনাদার হাতে আসে একটা পুরোনো মানচিত্র আর ধাঁধার মতো কিছু লেখা। জানা যায়, এই সব কিছু জড়িয়ে আছে বাংলার এক বিখ্যাত প্রাচীন রাজা – রাজা শশাঙ্ক আর তার গুপ্তধনের সঙ্গে।
সোনাদা বুঝে যায়, এটা সাধারণ কিছু না। এ যে একেবারে ইতিহাসের সোনার খনি! তিনজন মিলে রওনা হয় সেই গুপ্তধনের সন্ধানে। জায়গাটার নাম কর্ণসুবর্ণ – এক সময়ের রাজ্যের রাজধানী। ওরা খুঁজতে খুঁজতে পৌঁছে যায় নানা জায়গায় – পুরনো দুর্গ, ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, অদ্ভুত চিহ্ন আর সংকেতের ভেতর দিয়ে। প্রতিটি ধাপে একেকটা ধাঁধা – আর সেই ধাঁধা মেলালেই খুলছে গুপ্তধনের নতুন ইঙ্গিত।
কিন্তু ব্যাপার এত সহজ কই! তাদের পেছনে লেগে আছে কিছু ভয়ানক লোক – কেউ চাইছে ওই গুপ্তধন নিজের করে নিতে, কেউ আবার চাইছে সোনাদাদের থামিয়ে দিতে। বিশেষ করে ভুজঙ্গ নামের এক গুন্ডা আর ড্যাশানান নামে এক মাথাগরম অপরাধী – এরা কিছুতেই ছেড়ে কথা বলবে না।
তবে সোনাদা শুধু বইপাগল না, তার মাথা ঠান্ডা, বুদ্ধি তীক্ষ্ণ। একেকটা ধাঁধা সে এমন ভাবে ভাঙে, যেন সে চোখের সামনে সব দেখতে পাচ্ছে। ঝিনুক আর আবিরও সাহস দিয়ে সবসময় পাশে থাকে। অনেক চোরাগলি, গোপন দরজা আর টানটান উত্তেজনার পর তারা অবশেষে খুঁজে পায় সেই গুপ্তধনের ঠিকানা – যা শুধুই সোনা বা রত্ন না, বরং এক বিশাল ঐতিহাসিক মূল্যবান জিনিস। একরকমভাবে, এটা বাংলার অতীতের গর্ব – রাজা শশাঙ্ক নিজের হাতে গড়া ইতিহাসের স্মারক।
সবশেষে, সোনাদা সেই গুপ্তধনকে নিজের কাছে না রেখে তুলে দেয় সঠিক জায়গায়, যাতে সবাই জানতে পারে বাংলার হারানো ইতিহাস, আর দেশের গৌরবের একটা বড় অংশ ফিরে আসে।